টাঙ্গাইল শহরের আকুর টাকুর পাড়ার বাসিন্দা সুদীপ্ত রায়ের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে লেখা বই অ্যামাজনে প্রকাশিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সুদীপ্ত রায় নিজেই এবিষয়ে জানিয়েছেন।
তিনি একই এলাকার অরবিন্দ রায়ের ছেলে। করোনাকালীন সময়ে যখন তার কলেজ বন্ধ ছিল, তখন থেকেই তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেছেন। এই বিষয়ে তিনি ‘দ্য গ্রেট পলিটিক্যাল লিডারশিপ’ নামে বই লিখেছেন।সেটিই অ্যামাজনে প্রকাশিত হয়েছে।
সুদীপ্ত রায় বলেন, করোনাকালীন সময়ে লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। সেই অলস সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ কিভাবে করা যায়, কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায়, এগুলো নিয়ে গবেষণা করি। এই বিষয় নিয়ে অনলাইনে জাতিসংঘের একটি কোর্স করি। কোর্সটি শেষ করার পর তারা আমাকে সনদপত্র দেয়। এছাড়া জাতিসংঘের আরেকটি ফোরামে অংশগ্রহণ করে সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করি। সেখানে বাংলাদেশের জলবায়ু নিয়ে তুলে ধরি। এভাবে আরও বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণ করে জলবায়ু নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করি। পরে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও করণীয় নিয়ে একটি ম্যাগাজিন আকারে বই লিখি।
তিনি আরও বলেন, বইটি লিখতে আমার প্রায় ৬ মাস সময় লেগেছে। পরবর্তীতে বইটি অ্যামাজনে পোস্ট করি। সেখানে অনেক মানুষ আমার বইটি পড়েছে। বইতে জলবায়ু নিয়ে পদক্ষেপ, করণীয় এবং ব্যর্থতা কী কী, এসময়ে অর্থনীতির হালচালও তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব রাজনীতি নিয়েও এতে লেখা রয়েছে।
জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রতিবছর ৭০ লাখ মানুষ জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে মারা যাচ্ছেন। এদিকে বাংলাদেশ সরকার জলবায়ু নিয়ে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। এসময়ে সরকারের বাজেট বাড়ানোর পাশাপাশি এবিষয়ে জেলায় জেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে জনসাধারণকে সচেতনও করা হয়েছে। প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেও সম্পৃক্ত করা হয়েছে। আরও কিভাবে জনসাধারণকে সচেতন করা যায়, সেই বিষয়েও লেখা রয়েছে, বলেন তিনি।
সুদীপ্তর মা সম্পা রানী দে বলেন, ছোটবেলা থেকেই তার মেধা ছিল অন্যরকম। পড়ালেখার বাইরেও ওর বাবার সাথে জলবায়ু, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করতো। প্রথম জানতামই না সে বই লিখেছে। পরে জানলাম জলবায়ু নিয়ে বই লিখেছে। এছাড়া সে বিভিন্ন কোর্সে অংশগ্রহণ করে অনেক সার্টিফিকেট পেয়েছে।
সুদীপ্তর বাবা অরবিন্দ চন্দ রায় বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ছেলের বই অ্যামাজনে প্রকাশিত হয়েছে এবং তাতে পৃথিবীর অনেক মানুষ তার লেখা পড়বে, এটা খুবই গর্বের এবং আনন্দের। আমাদেরও আগ্রহ ছিল। অনুকূল পরিবেশ আর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সে এতদূর পর্যন্ত এসেছে।
টাঙ্গাইল সরকারি এমএম আলী কলেজের অধ্যক্ষ শহিদুজ্জামান মিঞা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জীব-বৈচিত্র হুমকির মুখে পড়ছে। এর প্রভাব পড়ছে মানবজীবন ও প্রাণীকূলের ওপর। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এই কলেজের যে শিক্ষার্থী জলবায়ু নিয়ে কাজ করছে, তাকে স্বাগত জানাই।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।